জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় জিয়া পরিষদের সভাপতি মো. মোকছেদ হোসেন আওয়ামী লীগের একজন সক্রিয় কর্মী বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ...
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় জিয়া পরিষদের সভাপতি মো. মোকছেদ হোসেন আওয়ামী লীগের একজন সক্রিয় কর্মী বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও জয়পুরহাট-২ আসনের এমপি আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনের একান্ত আস্থাভাজন ছিলেন বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি জিয়া পরিষদ জয়পুরহাট জেলা কমিটির সভাপতি মো. আমিনুর রহমান বকুল ও সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলামের যৌথ স্বাক্ষরে জিয়া পরিষদ কালাই উপজেলা কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে বিষয়টি এতদিন গোপন রাখা হয়।
দলীয় সূত্রে বিষয়টি এতদিন পর জানাজানি হওয়ায় ওই কমিটিতে থাকা অনেকেই বিড়ম্বনায় পড়েছেন। এদিকে, ২০১৪ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত কালাই উপজেলা জিয়া পরিষদের সভাপতি পদে থাকা মো. আতাউর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম তালুকদার লায়ন উভয়েই দলের জন্য নিবেদিত ও সক্রিয় ছিলেন বলে জানা যায়। অথচ তারাও ওই কমিটির বিষয়ে কিছু জানেন না।
এমনকি আগের কমিটির পুরোনো এবং নতুন কমিটির অনেকেই নতুন কমিটিতে থাকার বিষয়টি জানেন না। এই কমিটি বিষয়ে আরও জানা গেছে, বিতর্কিত ওই কমিটিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিক, সহকারী শিক্ষক ও দপ্তরিসহ আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী রাখা হয়েছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন পদে কমিটিতে থাকা অনেকেই জানেন না।
জিয়া পরিষদ কালাই উপজেলা শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম তালুকদার লায়ন বলেন, নতুন কমিটিতে অনেক যোগ্য ও দলের জন্য নিবেদিত ব্যক্তিকে রাখা হয়নি। ২০১৪ সাল থেকে নতুন পকেট কমিটি অনুমোদন দেওয়ার আগ পর্যন্ত জিয়া পরিষদ কালাই উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছি। অথচ নতুন কমিটি গঠনের বিষয়ে তিনিসহ আগের কমিটির সভাপতি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। যাচাই-বাছাই ছাড়া এবং মতামত না নিয়েই নতুন ওই কমিটিতে সদস্য করায় অনেকে বিড়ম্বনার মধ্যে পড়েছেন। টাকার বিনিময়ে নতুন পকেট কমিটিতে আওয়ামী লীগের সক্রিয়কর্মীকে সভাপতি হিসেবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড বিএনপির জনপ্রিয়তা কমাবে।
কালাই উপজেলা জিয়া পরিষদের ২০১৪ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সভাপতি থেকে পদে থাকা মো. আতাউর রহমান বলেন, জেলা জিয়া পরিষদের সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক আমিনুর রহমান বকুল একজন অর্থলোভী, নীতিহীন ব্যক্তি। টাকার বিনিময়ে আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মীকে তিনি জিয়া পরিষদে রাখলে অবাক হওয়ার কিছুই নেই। কারণ টাকা হাতানোর স্বভাবটি তার নতুন নয়, আগের। টাকার বিনিময়ে তিনি জিয়া পরিষদ কালাই উপজেলা শাখার নতুন কমিটিতে বিতর্কিত ও ফ্যাসিস্ট ব্যক্তিকে সভাপতি হিসেবে অনুমোদন দিয়েছেন, এ কথা সহজেই বোধগম্য। তবে বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত, দুঃখজনক এবং বিএনপির জন্য নেতিবাচক।
নবনির্বাচিত কালাই উপজেলা জিয়া কমিটির সভাপতি মো. মোকছেদ হোসেন জানান, তিনি জীবনের প্রথম থেকেই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। চাকরি বাঁচানোর তাগিদে তাকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে থাকতে হয়েছে। ১৫ আগস্ট অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হয়েছি, তাতে সাংবাদিকদের সমস্যা কী? সব সাংবাদিক এমপি স্বপনের চামচামি করেছে। আমি করেছি- তাতে কী হয়েছে।
জয়পুরহাট জেলা কমিটির সভাপতি মো. আমিনুর রহমান বকুল জানান, ওই কমিটির যাবতীয় বিষয় সম্পর্কে সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলামই ভালো জানেন।
জয়পুরহাট জেলা জিয়া পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে আমি কিংবা আমার সভাপতি আপনাদের বক্তব্য দিতে বাধ্য নই।
নিউজ ডেস্ক/ডেইলি জয়পুরহাট
কোন মন্তব্য নেই