Page Nav

HIDE

Grid

GRID_STYLE

Hover Effects

TRUE
{fbt_classic_header}

Header Ad

ব্রেকিং নিউজ

latest

Ads Place

হিলিতে জুটমিল বন্ধ, দিশেহারা শ্রমিক

পারিবারিক দ্বন্দ্বে বন্ধ হয়ে গেছে দিনাজপুরের হিলি আরনু জুটমিল। মিল বন্ধ হওয়ায় দিশেহারা নারী-পুরুষ শ্রমিকেরা। কাজ না পেয়ে পরিবার নিয়ে অসহনীয় ...

পারিবারিক দ্বন্দ্বে বন্ধ হয়ে গেছে দিনাজপুরের হিলি আরনু জুটমিল। মিল বন্ধ হওয়ায় দিশেহারা নারী-পুরুষ শ্রমিকেরা। কাজ না পেয়ে পরিবার নিয়ে অসহনীয় জীবন-যাপন করছেন এসব শ্রমিক। এদিকে মিলের অংশীদারি নিয়ে থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দায়ের করেছেন অংশীদাররা।

হিলি পৌর এলাকায় ডাঙ্গাপাড়ায় অবস্থিত আরনু জুটমিল। মেসার্স আরনু জুট মিলস লিমিটেডের অংশীদার তিন ভাই-বোন, এমডি সাফি হাজী, চেয়ারম্যান আব্দুল কাইউম আজাদ ও ডিরেক্টর নুরুন নাহার আহমেদ আরনু। মিলটিতে কাজ করে ৭০০ থেকে ৮০০ জন শ্রমিক। প্রায় ২৫ দিন থেকে এমডি সাফি হাজী জুটমিলটি বন্ধ করে রেখেছেন। মিল বন্ধ হওয়ায় কর্মহীন হয়ে পড়ে এসব শ্রমিক। তবে মিলটি সচল করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন মিলের চেয়ারম্যান ও ডিরেক্টর। এদিকে কাজ ফিরে পাবার আশায় শ্রমিকরা ঘুরছেন জুটমিলের চারপাশে। 

আরসেদুল, মইনুলসহ কয়েকজন শ্রমিক বলেন, ২৫ দিন আগে আমাদের এই জুটমিল বন্ধ করে দিয়েছে এমডি স্যার। আজ আমরা কর্মহীন হয়ে পড়েছি। মিলে কাজ করে আমরা যা উপার্জন করতাম, তা দিয়ে আমরা সংসার ভালভাবে চালিয়েছি। আজ ২৫ দিন থেকে কাজ না করে, আমাদের সংসার অচল হয়ে গেছে। আমরা চাই আমাদের জুটমিল চালু হউক।

কয়েকজন নারী শ্রমিক বলেন, আজ অনেক দিন আমরা বসে আছি। বসে থাকলে আমরা চলবো কি করে। সংসারে খরচ আছে আবার কিস্তি চালাতে হয়। মালিক যে কি কারণে মিল বন্ধ করে দিলো জানিনা। তবে মিলটা খুললে আমাদের ভাল হয়।

হিলি শ্রমিক ইউনিয়ন ফেডারেশনের সভাপতি সবিরুল ইসলাম বলেন, আরনু জুটমিলে আমার প্রায় ৭০০ থেকে ৮০০ শ্রমিক কাজ করেন। এমডি সাফি হাজী বিগত ২৫ দিন থেকে মিলটি বন্ধ রেখেছেন। আজ শ্রমিকরা খেয়ে না খেয়ে ছেলেমেয়েদের নিয়ে অসহায়ত্বের মতো জীবন যাপন করছে। আমি মিলটি দ্রুত চালু করা আহবান জানাচ্ছি।

হিলি পৌরসভার সাবেক পৌর মেয়র ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শিল্পী বলেন, আরনু জুটমিলটি অনেক মানুষের কর্মসংস্থান। এটা কিছুদিন থেকে বন্ধ রয়েছে। এতে করে এই মিলের কর্মরত অনেক শ্রমিক বেকার জীবন যাপন করছে। আমি মিল মালিকদের সাথে কথা বলে মিলটি চালু করার চেষ্টা করছি। 

আরনু জুটমিলের ডিরেক্টর নুরুন নাহার আহমেদ আরনু বলেন, আমি আর আমার বড় ভাই বিদেশি থাকি। কয়েকদিন আগে জানতে পারলাম আমার ভাই শেখ সাফি হাজী মিলটি বন্ধ করে দিয়েছে। কেন সে মিল বন্ধ করে রেখেছে সেটি জানি না, আমরা জানার জন্য দেশে ফিরে এসেছি।

আরনু জুটমিলের চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম আজাদ বলেন, দেশে ফিরে দেখি মিলটি বন্ধ করে রেখেছে। ২৫ দিন থেকে বন্ধ, এতে করে অনেক মালামল নষ্ট হয়ে গেছে। আবার সে আমাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিয়েছে। আমরাও পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেছি। মিল বন্ধ থাকায় অনেক ক্ষতি হয়েছে। আমরা মিলের পণ্য বিদেশে রপ্তানি করি। তাতে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা আর্জনে ব্যাহত হচ্ছে। আগামী শনিবার থেকে আমরা মিলটি চালু করবো। 

মিল কেন বন্ধ আছে জানতে চাইলে আরনু জুটমিলের এমডি শেখ সাফি হাজী বলেন, বিগত ৫ বছর যাবৎ আমার ভাই-বোন মিলটির কার্যক্রম চালিয়েছেন। কিন্তু তারা ব্যাংকের কোন কিস্তি পরিশোধ করেননি। এই জুটমিলের তারা ৬০% অংশীদার আর আমি ৪০%। তারা বিদেশে থাকে। ব্যাংক মিলের বিরুদ্ধে মামলা করেছে, তাহলে আমি কেন একা এর দায়ভার নিবো, এই কারণে মিল বন্ধ রেখেছি।

তিনি আরও বলেন, আমি যে ৭ কোটি টাকার স্কেনশন (সম্প্রসারণ) নিয়েছি সেটি দিয়ে দেক এবং আমাকে মিলে না রাখতে চাইলে আমার যে ৪০% শেয়ার আছে সেটি ফেরত দেওয়া হউক। তারা এটাতে রাজি নই, তারা শনিবার থেকে জোর করে মিল চুলু করবেন। 

এবিষয়ে হাকিমপুর (হিলি) থানার অফিসার ইনচার্জ সুজন মিঞা বলেন, হিলির আরনু জুটমিলটি বেশ কিছুদিন থেকে বন্ধ রয়েছে। এখানে অনেক শ্রমিক কাজ করে থাকে। মিলের অংশীদার তিন ভাই-বোন। তারা পাল্টাপাল্টি থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। তবে তারা যেহেতু আপন ভাই-বোন, নিজেদের মধ্যে সমাধানের চেষ্টা করছেন।

মোকছেদুল মমিন মোয়াজ্জেম।

 

কোন মন্তব্য নেই

Ads Place