জয়পুরহাটের কালাইয়ে এক নারীকে ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য চেষ্টা করছেন গ্রাম্য মাতব্বরা। এটঘনায় জয়পুরহাট আদালতে একটি ধর্ষণ মামলাও হয়েছে...
জয়পুরহাটের কালাইয়ে এক নারীকে ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য চেষ্টা করছেন গ্রাম্য মাতব্বরা। এটঘনায় জয়পুরহাট আদালতে একটি ধর্ষণ মামলাও হয়েছে। তবে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য ভুক্তভোগী ওই নারীকে চাপ প্রয়োগ করছেন গ্রাম্য কতিপয় মাতব্বরা। ঘটনাটি উপজেলার উদয়পুর ইউনিয়নের ভাটাহার গ্রামে ঘটেছে।
ভিকটিম ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, ভিকটিমের স্বামী খাজা মিয়া সংসার চালানোর তাগিদে স্ত্রীকে গ্রামের বাড়িতে রেখে প্রায় চার বছর থেকে ভাড়ায় রিক্সা চালানোর জন্য ঢাকা-চট্রগ্রাম সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করতেন। বাড়িতে ফিরতেন দুই তিন মাস পরপর। এই সুযোগে একই গ্রামের ওমর আলী নামের এক লম্পট তিন বছর আগে মোবাইলে ওই নারীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। এরই একপর্যায়ে ওই প্রেম পরকীয়ায় রূপ নেয়। আর বিয়ের প্রলোভনে তা নিয়মিত দৈহিক সম্পর্কে গিয়ে পৌঁছে। পরকিয়া প্রেমের বিষয়টি একপর্যায়ে পাড়া প্রতিবেশীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। একসময় ভিকটিমের স্বামীও বিষয়টি জানতে পারে। তখন ভিকটিম ওমর আলীকে বিয়ে করতে বললে তিনি তাকে বিয়ে করতে অসম্মতি জানায়। ফলে ভিকটিম বাধ্য হয়ে সম্প্রতি ওমর আলীর বিরুদ্ধে জয়পুরহাট আদালতে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য বাদশা মিয়া ওরফে লাল মিয়াসহ গ্রাম্য মাতব্বরা ধর্ষক ওমর আলীকে বাচাঁনোর জন্য ২০ হাজার টাকায় গোপন চুক্তিতে সালিশ বসায়। ওই সালিশি বৈঠকে ওমর আলীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে ধর্ষণের বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। বৈঠকে শর্ত দেওয়া হয় মামলা তুলে নিলে ভিকটিমকে ওই জরিমানার ৫০ হাজার টাকা বুঝিয়ে দেওয়া হবে। বর্তমানে ওই ৫০ হাজার টাকা স্থানীয় ইউপি সদস্য লাল মিয়ার নিজ হাতে জমা রেখে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন ভাবে ভিকটিম ও তার স্বামীকে চাপ প্রয়োগ করছে।
ভিকটিম ও তার স্বামী জানান, ভিকটিমের ইজ্জতের মুল্য গ্রাম্য সালিশে ৫০ হাজার টাকা ধার্য করা হয়েছে। মামলা তুলে নিলে ওই টাকা তাদের দেওয়া হবে। এবিষয়ে তারা কারো কাছ থেকে কোন টাকা নেননি বা পাননি। মামলাটি তুলে নেওয়ার জন্য তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে চাপ দেওয়া হচ্ছে।
ধর্ষণের বিষয়ে জানার জন্য ওমর আলীর বাড়িতে গিয়েও তার দেখা পাওয়া যায়নি। তার পরিবারের সদস্যের কাছ থেকে মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উদয়পুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য বাদশা মিয়া ওরফে লাল মিয়া জানান, জরিমানার ৫০ হাজার টাকা তার কাছে জমা আছে। ভিকটিম মামলাটি তুলে নিলে ওই ৫০ হাজার টাকা তাকে দেওয়া হবে।
মো: চঞ্চল বাবু।
কোন মন্তব্য নেই