জয়পুরহাট-বগুড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের বাঁশের ব্রিজ এলাকায় কাটা গাছ সড়কে ফেলে ডাকাতি, বাস ভাঙচুরসহ যাত্রী ও সুপারভাইজারকে জিম্মি করে নগদ টাকা এবং...
জয়পুরহাট-বগুড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের বাঁশের ব্রিজ এলাকায় কাটা গাছ সড়কে ফেলে ডাকাতি, বাস ভাঙচুরসহ যাত্রী ও সুপারভাইজারকে জিম্মি করে নগদ টাকা এবং অ্যান্ড্রয়েড ফোন লুটের অভিযোগ উঠেছে। জেলার কালাই উপজেলার পুনট ইউনিয়নের বাঁশের ব্রিজ এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে পরিবহন মালিক পক্ষ এবং এলাকাবাসী নিজেদের আরও সচেতন হওয়ার সাথে সাথে আঞ্চলিক মহাসড়কে পুলিশি টহল জোরদারের দাবি জানিয়েছেন।
'শাহ ফতেহ আলী' কোচের বগুড়া অফিসের ব্যবস্থাপক আজিজুল হক বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটায় বলেন, ' কুয়াকাটা থেকে দিনাজপুরগামী একটি যাত্রীবাহী কোচ জয়পুরহাটের বাঁশের ব্রিজ এলাকায় বুধবার দিবাগত রাতে ডাকাত দলের কবলে পড়ে। সে সময় রাস্তায় একটি কাটা গাছ ফেলে রেখে, বাসটির গতি রোধ করা হয়। তারপর বাসটি ভাংচুর করে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়। এক পর্যায়ে বাসটির সুপারভাইজার এবং যাত্রীদের জিম্মি করা হয়। এরপর সুপারভাইজার, ড্রাইভার এবং হেলপারের কাছ থেকে অ্যান্ড্রয়েড ফোনসহ তাঁদের কাছে থাকা কালেকশনের নগদ অন্তত ৫০ হাজার টাকা কেড়ে নেওয়া হয়। একই সময়ে বেশ কিছু যাত্রীদের কাছ থেকে অ্যান্ড্রয়েড ফোন ও নগদ অর্থসহ বিভিন্ন মালপত্র ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এ বিষয়ে আমরা ১ নভেম্বর, শুক্রবার কালাই থানায় গিয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করব। '
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এলাকাবাসীর আঞ্চলিক এ মহাসড়কে টহল পুলিশের তৎপরতা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন।
পুলিশের ভাষ্য, অনাকাঙ্ক্ষিত এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি পরবর্তীতে যাতে আর না ঘটে, সেজন্য আঞ্চলিক এ মহাসড়কে পুলিশি তৎপরতা বাড়ানোর জোরালো আশা প্রকাশ করা হয়। সেই সাথে কোচ কর্তৃপক্ষ এবং যাত্রীদের আরও সচেতন হতে হবে। রাতে অবশ্যই যাত্রীবাহী পরিবহনের দরজা লক করে রাখতে হবে। একসাথে বেশি কোচ দলবদ্ধ হয়ে মহাসড়কে যাত্রা করতে হবে। সড়কে কোন প্রকার প্রতিবন্ধকতার আভাস পাওয়া গেলে, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দ্রুত জানাতে হবে। তাতে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত রোড ডাকাতির ঘটনা প্রতিহত করা যাবে।
এলাকাবাসী জানান, ইতোপূর্বেও বেশ কয়েকবার বাঁশের ব্রিজ এলাকায় একই কায়দায় রোড ডাকাতের ঘটনা ঘটেছিল। দেশ বর্তমান একটি বিশেষ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায়, পুলিশি তৎপরতা ও কিছুটা কমে গেছে। তাই এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা রোধে আঞ্চলিক মহাসড়কে পুলিশি টহল জোরদার করার দাবি জানান তাঁরা।
আব্দুল হাকিম নামের একজন ব্যবসায়ীর দোকান ঘর ঘটনাস্থলের অদূরে। তিনি জানান, বুধবার দিবাগত রাতে বেচা বিক্রি শেষে তিনি দোকানে ঘুমিয়ে পড়েন। এরই মধ্যে কোন এক সময়ে সুযোগ বুঝে রোড ডাকাতি করেছেন দুর্বৃত্তরা। তিনি একজন ব্যবসায়ী। তাই রাতে দোকান বন্ধ করলে বা ঘুমিয়ে পড়লে, আর দোকান থেকে বের হন না তিনি। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখেছেন- একটি কাটা গাছ আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে রাখা হয়েছে। সম্ভবত টহলরত পুলিশ সড়কের উপর থেকে গাছটি পাশে সরিয়ে রেখেছেন।
কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হোসেন বৃহস্পতিবার বিকেলে জানান, অনাকাঙ্ক্ষিত এসব ঘটনা প্রতিরোধে জয়পুরহাট-বগুড়া আঞ্চলিক মহাসড়কসহ উপজেলার অন্যান্য সড়ক গুলোয় পুলিশি টহল বাড়ানোসহ নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। পুলিশের একার পক্ষে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা রোধ করা কঠিন। সেজন্য বাস মালিক পক্ষ, বাসের যাত্রী এবং এলাকাবাসীর সচেতনতা এবং আন্তরিক সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য। রাতে অনাকাঙ্ক্ষিত যেকোনো ঘটনার আভাস পাওয়া মাত্র আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দ্রুততার সাথে তা জানাতে হবে। রাতের বেলায় দূরপাল্লার বাসের দরজা লক করে রাখতে হবে। তাতে করে পুলিশও দ্রুততার সঙ্গে বিষয়টির মোকাবিলা করতে পারবে।
মো. আতাউর রহমান।
কোন মন্তব্য নেই