Page Nav

HIDE

Grid

GRID_STYLE

Hover Effects

TRUE
{fbt_classic_header}

Header Ad

ব্রেকিং নিউজ

latest

Ads Place

ক্ষেতলালে মাদ্রাসার কমিটি নির্বাচনে ভুয়া ভোটার তালিকা

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার হোপপীর হাটা দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনে ভুয়া ভোটার তালিকা করে অভিভাবক সদস্য নির্বাচনের...

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার হোপপীর হাটা দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনে ভুয়া ভোটার তালিকা করে অভিভাবক সদস্য নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা ও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। 

এনিয়ে মাদ্রাসার অভিভাবক আমিনুর রহমান ও আনোয়ার হোসেন নির্বাচনের প্রিসাইডিং অফিসার ও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, উপজেলার হোপপীর হাটা দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনের জন্য গত ১০ জুন চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক হওয়া শর্তেও অনেক অভিভাবক সেটি জানতে পারেনি। পরবর্তীতে ৪ জুলাই তফসিল মোতাবেক নিয়মিত ম্যানেজিং কমিটি গঠনের বিষয়ে জানতে পারলে সে মোতাবেক কয়েকজন অভিভাবক প্রতিষ্ঠানে গিয়ে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা সংগ্রহ করে দেখতে পারে অভিভাবক ভোটার তালিকা (এবতেদায়ি স্তর) ১ম শ্রেণি-৫ম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ৭৮ জন অভিভাবককে চুড়ান্ত ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যার অধিকাংশই ভুয়া। তদন্ত করলে ৭৮ জনের মধ্যে ৫০ জনেরও অধিক ভুয়া প্রমাণিত হবে।

ঘোষিত ভোটার তালিকা অনুযায়ী ইবতেদায়ি থেকে দাখিল শ্রেণী পর্যন্ত ১৭০ জনের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে৷ ভোটার তালিকা অনুযায়ী ওইসব শিক্ষার্থীর পরিবারের সঙ্গে কথা বললে ভুয়া তালিকার অভিযোগের সত্যতা মেলে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ৫ম থেকে ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত প্রত্যেক ভোটার তালিকায় ভুয়া শিক্ষার্থীর নাম ঠিকানা ব্যবহার করে ভুয়া তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে৷ 

ইবতেদায়ী ১ম শ্রেণীতে নিয়মিত ক্লাস করেন ৩জন, দ্বিতীয় শ্রেণীতে ক্লাস করেন ২জন, ৩য় শ্রেণীতে ক্লাস করে ৩ জন, ৪র্থ শ্রেণীতে ক্লাস করেন ৫ জন৷ 

৩য় শ্রেণীর আফরিন খাতুন, তানজিল হোসেন, আফরিন খাতুন, শাহিনা খাতুন, মোমেনা খাতুন, শরিফুল ইসলাম, আবুল হোসেন, ইসাক আলী, আব্দুল্লাহর নাম তালিকায় থাকলেও তারা কেউ ওই মাদ্রাসার শিক্ষার্থী নয়৷ এদের মধ্যে কেউ কেউ বিভিন্ন হাফেজিয়া মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেন৷ ৩য় শ্রেণীর আরেক শিক্ষার্থী এবিএম মাসুদুর রহমানের ছেলেকে এক সপ্তাহ পূর্বে মাদ্রাসায় ভর্তি করেও তিনিও ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন৷

৪র্থ শ্রেণির ভুয়া ভোটার তালিকায় নাম থাকা শিক্ষার্থী, বিজয় হোসেন, মারিয়া সুলতানা, ফাতেমা খাতুন, এরশাদ হোসেন, শাহিদুল ইসলাম, রেজাউল করিম, শরিফা খাতুন, তোফাজ্জল হোসেন, আব্দুর শহীদের নাম তালিকায় থাকলেও তারা কেউ ক্লাস করেন না। 

৫ম শ্রেণীর ভোটার তালিকায় ২২ জন শিক্ষার্থী থাকলেও নিয়মিত ক্লাস করে ৩জন। বাকি সবাই ক্লাসে অনুপস্থিত৷

৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী আরাফাত হোসেন জানা, মারিয়া ও আব্দুল্লাহ ছাড়া সে আর কাউকে চিনেনা। শুধু তারা ৩ জন ছাড়া আর কেউ ক্লাসে আসেনা।

৭ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আফসার রহমানের ছেলে আসিফ ইসলাম নাফি নিয়মিত ক্লাস করেন না৷ 

৮ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী নূর মোহাম্মদের মেয়ে সুরভী আক্তার ভোটার তালিকায় নাম থাকলেও ওই শিক্ষার্থীকে ওই ক্লাসের অন্যান্য শিক্ষার্থীরা চেনেন না৷ 

১০ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আনোয়ার হোসেনের ছেলে ফিহাদ বাবু, নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী মোফাজ্জল হোসেনের মেয়ে নাজিফা আক্তারের নাম ভোটার তালিকায় থাকলেও তারা এখানে পড়েন না।

এছাড়াও দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী জান্নাতুল আক্তার ও নাজমিন নাহার নাজু ২জনেই বিবাহিত। তারা এখন স্বামীর সংসার করছেন৷  

মাদ্রাসার অভিভাবক আমিনুর রহমান বলেন, আমি ওই মাদ্রাসার একজন অভিভাবক। আমাদের কাউকে না জানিয়ে তারা গোপনে তফসিল করেছে। শেষদিন আমরা জানতে পারার সঙ্গে সঙ্গে তরিঘরি করে কয়েকজন গিয়ে মনোনয়ন তুলি। পরে ভোটার তালিকা তুলে দেখি অধিকাংশ শিক্ষার্থীরাই ভুয়া। মাদ্রাসায় দীর্ঘদিন যাবত একটা মহল বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতি করে সুবিধাভোগ করে আসছে। মাদ্রাসায় ৩ টি শূন্যপদে কর্মচারী নিয়োগ হবে। যা নিয়ে তারা নিয়োগ বানিজ্য করবে। এ কারণেই তাদের যোগসাজশে গোপনে ভুয়া ভোটার তালিকা করে এই কমিটি করার পরিকল্পনা করেছে সুপার। এর প্রতিবাদে আমরা ইউএনও স্যার, প্রিসাইডিং কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার, উপজেলা ও জেলা শিক্ষা অফিসার এবং ডিসি স্যারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি। অবিলম্বে এই তফসিল বাতিল করে পুনরায় ভোটার হালনাগাদ ও সংশোধন করে পুনরায় তফসিল ঘোষণার দাবি জানাই৷  

মাদ্রাসার বর্তমান সভাপতি এবং বড়তারা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান বলেন, আমরা কোন ভুয়া তালিকা করিনি। মাদ্রাসায় যেমন নিয়মিত শিক্ষার্থী থাকে তেমনি কিছু অনিয়মিত শিক্ষার্থীও থাকে। যারা প্রথমে ভর্তি হয়েছিল আমরা তাদেরও তালিকায় নিয়েছি। আর আমরা কোন কারচুপি করিনি। তফসিল ও ভোটার তালিকা নোটিশ বোর্ডে টাঙানো হয়েছিল। যারা মনোনয়ন তুলেছে তারা ভোটার তালিকাও নিয়েছে। তারা ভোট করুক কোন সমস্যা নাই। কেউ অভিযোগ করলে প্রশাসন তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবে।

মাদ্রাসার সুপার (ভারপ্রাপ্ত) জহুরুল ইসলাম বলেন, আমরা বিধি মোতাবেক ভোটারতালিকা প্রস্তুত করেছি৷ নীতিমালা অনুযায়ী ক্লাসে ক্লাসে শুনিয়েছি । বোর্ডে হাঙ্গিং করেছি। এর কয়েকদিন পর সেটি ফাইনাল করেছি। প্রতিষ্ঠান চালাতে গেলে কিছু ভুলক্রুটি হলে সেটি অস্বাভাবিক নয় স্বাভাবিক। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচনের প্রিসাইডিং অফিসার এবং উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার আদনান মেহেদি বলেন, ইউএনও স্যার এই প্রথম আমাকে নির্বাচনের দায়িত্ব দিয়েছেন। ভোটার তালিকা দেখে তফসিল ঘোষণা করেছি।  ভুয়া তালিকার বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আমি সুপারকে ডেকেছি। ভোটার তালিকা সঠিক না হলে রিটার্নিং অফিসার ইউএনও স্যারের সঙ্গে আলোচনা করে তফসিল বাতিল করব৷

উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে তাবাসসুম বলেন, একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মো.আমানুল্লাহ আমান।

 

কোন মন্তব্য নেই

Ads Place