জয়পুরহাটে মাদক কারবার ও সেবনে বাঁধা দেওয়ায় তাঁদের মারপিটে নিহত হয়েছেন পাপিয়া। এ ঘটনায় নিহতের ছোট বোন পারভীন বেগম বাদী হয়ে গতকাল শনিবার ব...
জয়পুরহাটে মাদক কারবার ও সেবনে বাঁধা দেওয়ায় তাঁদের মারপিটে নিহত হয়েছেন পাপিয়া। এ ঘটনায় নিহতের ছোট বোন পারভীন বেগম বাদী হয়ে গতকাল শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে জয়পুরহাটের কালাই থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এলাকাবাসী, নিহতের আত্মীয়-স্বজন এবং পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জয়পুরহাটের কালাই পৌরসভার মূলগ্রাম মহল্লার সেলিম (৪০) এবং তাঁর ছেলে রক্সি (১৯) একজন পেশাদার মাদক কারবারি। তাঁরা মাদক সেবিও ছিলেন। সেলিমের স্ত্রী পাপিয়া (৩৮) তাঁকে বরাবরই এ কাজ করতে বাধা দিতেন। এতে সেলিম তাঁর স্ত্রীকে নানাভাবে নির্যাতন করতেন। এ ঘটনার কিছুদিন আগেও পাপিয়া বেগমকে মারধর করে বাড়ির একটি গোয়ালঘরে আটকে রাখা হয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৩ মে, সোমবার আবারও পাপিয়া তাঁর স্বামী সেলিমকে মাদক কারবারে বাধা দেন। এ নিয়ে পারিবারিক কলহের এক পর্যায়ে পাপিয়াকে তাঁর স্বামী, পুত্র ও পুত্রবধূ নির্মমভাবে মারপিট করে। এতে পাপিয়া গুরুতর আহত হোন। খবর পেয়ে ঘটনার পরের দিন মঙ্গলবার পাপিয়ার ছোট বোন পারভীন অন্যান্য আত্মার স্বজনের সহায়তায় তাঁকে উদ্ধার করে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে দেন। তখন সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য পাপিয়াকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমানের মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শজিমেক) স্থানান্তর করেন। শজিমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৪ মে শুক্রবার রাত ১০ টার দিকে পাপিয়া মৃত্যু বরণ করেন।
স্থানীয় কাউন্সিলর মহসিন আলী বলেন, পাপিয়ার স্বামী ও ছেলে মাদক কারবার এবং সেবন করতেন। এ কাজে বাধা দিত বলে স্ত্রী পাপিয়াকে বরাবরই নির্যাতন করত সেলিম ও তাঁর ছেলে। গত ১৩ মে, সোমবার একই বিষয়ে বাধা দেওয়াতে তাঁদের পরিবারে কলহের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে পাপিয়াকে মারপিট করা হলে তিনি গুরুতর আহত হন। এ অবস্থায় বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঘটনার আব ১২ দিনের মাথায় গত ২৪ মে, শুক্রবার রাতে মৃত্যুবরণ করেন।'
নিহত পাপিয়ার ছোট বোন এবং এ হত্যা মামলার বাদী পারভিন বেগম বলেন, 'গত ১৩ মে, আমার দুলাভাই, ভাগিনা এবং ভাগিনার স্ত্রী আমার বোনকে অমানবিক ভাবে মারপিট করে। এতেই আমার বোন পাপিয়ার মৃত্যু হয়েছে। তাই ন্যায় বিচারের আশায় এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে কালাই থানায় হত্যা মামলা করেছি।'
এ বিষয়ে কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওয়াসীম আল বারী বলেন, 'পারিবার কলহের এ কারণে পাপিয়াকে নির্যাতন করা হয়। এতে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৪ মে, শুক্রবার রাত দশটার দিকে মারা যান তিনি। এরপর বগুড়া থানা পুলিশ ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের লাশ তাঁর আত্মীয়-স্বজনের কাছে হস্তান্তর করেন।
আবার এ ঘটনায় নিহতের ছোট বোন পারভীন বাদী হয়ে শনিবারে বিকেলে নিহতের স্বামী সেলিম, ছেলে রক্সি এবং পুত্রবধূ রিয়া আক্তারকে আসামী করে কালাই থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। '
ওসি আরও বলেন, 'গত ২০ মে, সোমবার এ হত্যা মামলার অন্যতম আসামী পাপিয়ার স্বামী সেলিম হোসেনকে মাদকসহ গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ হত্যা মামলায়ও তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে।'
মো. আতাউর রহমান।
কোন মন্তব্য নেই