‘কন্যা তুমি পণ্য নয়, কারো করুণার পাত্র নয়’ আমি নিজেও একজন কন্যা সন্তানের পিতা। আমার একটি মাত্র কন্যা সন্তান। কোন পেশাকেই আমি ছোট হিসেবে দেখি...
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজ এর ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে সুবর্ণ জয়ন্তী'র আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি'র বক্তব্যে জাতীয় সংসদের হুইপ ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি এসব কথা বলেন।
তিনি তার বক্তব্যের মধ্যে আরো বলেন, একজন গৃহবধূকে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কথা শুনতে হয়। একটি পরিবারে মেয়েরা সব সময় অবহেলিত হয়। বাড়িতে ভালো কিছু রান্না হলে সেটি আমরা সবাই ছেলে সন্তানের পাতে দেই। মাছের মাথা ছেলের পাতে, মুরগির রান ছেলের পাতে। পরিবারের সবচেয়ে খারাপ খাবারটি পরে মায়ের পাতে। আমি মনে করি পরিবারের সবচেয়ে ভালো খাবারটি কন্যা সন্তানের পাতে দেওয়া উচিত। কারন একজন মেয়ে বিয়ের পরে শশুর বাড়িতে গিয়ে ওই পরিবারের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে সে আর কখনো ভালো খাবার পায় না। আপনি আপনার কন্যাকে যতোই ধনী পরিবারে যতোই শিক্ষিত পরিবারে বিয়ে দেন না কেন ওই পরিবারের সবচেয়ে খারাপ খাবারটি আপনার মেয়ের পাতেই পরবে। তাই পরিবারে মেয়েকে ভালো খাবার দেওয়া উচিত, বিয়ের পরে সে আর কখনো সুযোগ পাবে না।
সবশেষে তিনি উপস্থিত ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমরা যদি বিনা বেতনে কাজের বুয়া না হতে চাও তাহলে তোমাদের অবশ্যই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। আদর্শ মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে। আমার জীবন সেদিন স্বার্থক হবে যেদিন তোমরা নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে গড়ে তুলে আমাকে অতিক্রম করবে।
প্রতিষ্ঠানের সভাপতি এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য আব্দুল মজিদ মোল্লার সভাপতিত্বে বিদ্যালয় মাঠে সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন মঞ্চে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাকিম মন্ডল, উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুসরাত জাহান বন্যা।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, ক্ষেতলাল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ সায়ফুল ইসলাম। আরও বক্তব্য রাখেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ারুজ্জামান তালুকদার নাদিম, সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র সিরাজুল ইসলাম সরদার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বুলু, ক্ষেতলাল থানা অফিসার ইনচার্জ রাজিবুল ইসলামসহ সাবেক ও বর্তমান শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
ক্ষেতলাল পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সূবর্ণজয়ন্তীতে সকাল থেকে শিক্ষার্থী, শিক্ষক কর্মচারী ও আমন্ত্রিত অতিথিরা নতুন সাজে সজ্জিত হয়ে ওই বিদ্যালয় উপস্থিত হতে থাকে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে তাদের পদচারনায় বিদ্যালয়ের মাঠ মুখরিত হয়ে ওঠে। দুপুরে ১ হাজার শিক্ষার্থী, ১০০ জন শিক্ষক কর্মচারী, ৩০০ জন আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যহ্নভোজ করান আয়োজকরা।
এর আগে সকাল ১০ টায় ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত জাহান বন্যা নেতৃত্বে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। র্যালিতে অংশগ্রহণ করেন প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থী, সাবেক ও বর্তমান শিক্ষক কর্মচারী এবং আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ।
দুপুরে জয়পুরহাট-২ আসনের সাংসদ ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মধ্যহ্নভোজে অংশগ্রহণ করেন।
কোন মন্তব্য নেই