জয়পুরহাটের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ৪টি নদীর ১১৩ দশমিক ৯১ কিলোমিটার পুন:খনন করার পাশাপাশি তুলশীগঙ্গা নদীর বাম ও ডান তীরের ৩০ দশমিক ৬৭ কিলোমিটার বা...
এছাড়াও অভ্যন্তরস্থ ছোট নদী, খাল ও জলাশয় পুনঃখনন (১ম পর্যায়) প্রকল্পের আওতায় ২৭ দশমিক ৭১ কিলোমিটার খালও খনন করা হয়েছে। ফলে কৃষক এখন থেকে পাবে শুষ্ক মৌসুমে বোরোসহ অন্যান্য ফসলে সেচ সুবিধা, বন্যার কবল থেকে রক্ষা পাবে ৫ হাজার ৭০০ হেক্টর জামির রোপা আমনসহ অন্যান্য ফসল, বাড়বে মৎস্যচাষের ক্ষেত্র, রক্ষা পাবে নদী ও জলাশয় কেন্দ্রিক প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত নদী পুনঃখনন ও বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় জয়পুরহাটের তুলশী গঙ্গা নদীর ৫৪ কিলোমিটার, ছোট যমুনা নদীর ৩৮ দশমিক ৬০ কিলোমিটার, চিড়ি নদীর ২১ দশমিক ৭০ কিলোমিটার ও হারাবতী নদীর ১৬ দশমিক ৫ কিলোমিটার পুনঃখনন কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩৬ কোটি টাকা। এ ছাড়াও তুলশীগঙ্গা নদীর বাম ও ডান তীরের ৩০ দশমিক ৬৭ কিলোমিটার বাঁধ পুণরাকৃতিকরণ করা হয়েছে। অন্যান্য বাস্তবায়িত প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে অভ্যন্তরস্থ ছোট নদী, খাল ও জলাশয় পুনঃখনন (১ম পর্যায়) প্রকল্পের আওতায় সদর উপজেলার হিচমী খাল ৬ দশমিক ৭০ কিলোমিটার, হেলকুন্ডা খাল ৬ দশমিক ৩৩ কিলোমিটার, পাঁচবিবি উপজেলার রতনপুর খাল ৩ দশমিক ৪০ কিলোমিটার, ক্ষেতলাল উপজেলার কুলবন্দি খাল ৬ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার ও আক্কেলপুর উপজেলার মাদারতলী খাল ৪ দশমিক ৫০ কিলোমিটার পুনঃখনন করা হয়েছে। নদী তীরবর্তী এলাকা ক্ষেতলাল উপজেলার ইকরগাড়া গ্রামের কৃষক এবাদুল জানান, নদীগুলো খনন হওয়ায় এখন পর্যাপ্ত পানি পাওয়া যাবে। ফসলে সেচ নিয়ে আর দুঃচিন্তা করতে হবেনা। সেচ কষ্টটাই আমাদের বড় কষ্ট ছিল।
আক্কেলপুর উপজেলার রাজকান্দা গ্রামের কৃষক ফাতেমা বেগম জানান, প্রতি বছর বনায় আমাদের ফসল নষ্ট হতো নদী খনণ ও বাধ পুণরাকৃতিকরণ করায় বন্যার কবল থেকে আমাদের ফসল রক্ষা পাবে।
সদর উপজেলার মহুরুল গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম জানান, নদীগুলো খনন হওয়ায় একদিকে বাডবে পানির প্রবাহ অন্যদিকে পর্যাপ্ত মাছ পাওয়া যাবে।
ক্ষেতলাল উপজেলার শালিকডুবি গ্রামের জেলে মোস্তাক ও মৎস্য চাষী আল আমিন জানান, নদী ও খালগুলো খনন হওয়ায় পানি ধারণ ক্ষমতা বাড়ার পাশাপাশি পাওয়া যাবে প্রচুর মাছ। তৈরি হবে মৎস্য চাষের ক্ষেত্রও।
জয়পুরহাট প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও সাংবাদিক শারমিন আশা স্বর্ণা বলেন, নদী ও খালগুলো পুণঃখনন হওয়ায় নদী ও খাল কেন্দ্রিক প্রাণ প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার একটা ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে ঠিকই কিন্তু জেলার কল-কারখানার বর্জ্য ও রাসায়নিক পদার্থ নদী ও খালে ফেলা বন্ধ করা না গেলে এই প্রকল্প পরিবেশ রক্ষায় কোন কাজেই আসবে না।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জয়পুরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী আতিকুর রহমান বলেন, নদী ও খাল পুনঃখনন ও বাঁধ নির্মাণের ফলে বন্যার কবল থেকে ফসল রক্ষাসহ নদীতে পানির ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং শুষ্ক মৌসুমে বোরোসহ অন্যান্য ফসলে সেচ সুবিধা প্রদান করা সম্ভব হবে। বাড়বে মৎস্য চাষের ক্ষেত্র, রক্ষা পাবে প্রাকৃতিক ভারসাম্যও। এজন্য প্রয়োজন সকল উদ্যোগ নেয়া হবে।
শফিউল বারী রাসেল।
কোন মন্তব্য নেই